আবৃত্তি একাডেমি’র ক্লাস নোট -১ । বাংলা ব্যাকরণের একটি প্রধান উৎস হচ্ছে ধ্বনি যা প্রতিটি বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে, নিচে ধ্বনি সম্পর্কে বা ...
আবৃত্তি একাডেমি’র ক্লাস নোট -১ । বাংলা ব্যাকরণের একটি প্রধান উৎস হচ্ছে ধ্বনি যা প্রতিটি বাক্য তৈরি করতে সাহায্য করে, নিচে ধ্বনি সম্পর্কে বা ধ্বনি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? আলোচনা করা হলো:
ধ্বনি কাকে বলে?
ধ্বনি হলো ভাষার সবচেয়ে ছোট একক, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের চিন্তা, অনুভূতি এবং তথ্যকে অন্যের কাছে পৌঁছে দিই।
ধ্বনি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
ফুসফুস থেকে বের হওয়া বাতাস যখন গলার এবং মুখের বিভিন্ন অংশে বাধা পায়, তখন ধ্বনির সৃষ্টি হয়। এই ধ্বনিকেই আমরা শুনি।
ধ্বনি প্রকারভেদ
ধ্বনিকে সাধারণত ২ ভাগে ভাগ করা হয় যথাঃ
- স্বরধ্বনি
- ব্যঞ্জনধ্বনি
স্বরধ্বনি
স্বরধ্বনি হলো এমন কিছু ধ্বনি যা উচ্চারণের সময় ফুসফুস থেকে নির্গত বাতাস মুখের মধ্য দিয়ে অবাধে প্রবাহিত হয়। এই ধ্বনিগুলি উচ্চারণের জন্য মুখের কোনো অঙ্গের সাথে বাধা সৃষ্টি হয় না।
যা উচ্চারণের নিময় অনুযায়ী জিহ্বার অবস্থান- জিহ্বা মুখের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন অবস্থানে গিয়ে স্বরধ্বনির উচ্চারণে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, 'ই' উচ্চারণের সময় জিহ্বা তালুর কাছে আসে, আর 'আ' উচ্চারণের সময় জিহ্বা মুখের মধ্যভাগে থাকে। এবং ঠোঁটের অবস্থান- ঠোঁট খোলা, বন্ধ বা আংশিকভাবে খোলা থাকার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন স্বরধ্বনির উচ্চারণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, 'উ' উচ্চারণের সময় ঠোঁট গোলাকার হয়, আর 'আ' উচ্চারণের সময় ঠোঁট খোলা থাকে। কণ্ঠনালির অবস্থান-কণ্ঠনালির বিভিন্ন অংশের সংকীর্ণতা বা প্রসারণের উপর নির্ভর করে স্বরধ্বনির উচ্চারণ হয়। উদাহরণস্বরূপ, 'ই' উচ্চারণের সময় কণ্ঠনালি সংকীর্ণ হয়, আর 'আ' উচ্চারণের সময় কণ্ঠনালি প্রসারিত থাকে। যার সহজ একটি প্যাটার্ন তৈরি করেছি তার ছক র মাধ্যমে তুলে ধরা হলোঃ-
ব্যঞ্জনধ্বনি
ব্যঞ্জনধ্বনি হল সেই ধ্বনি যা উচ্চারণকালে ফুসফুস থেকে নিঃসারিত বায়ু মুখ দিয়ে বের হবার সময় পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাধা পায়, ঘর্ষণ পায়, অথবা সংকুচিত হয়। যেমনঃ “প” ধ্বনিটি দুই ঠোঁটে বাধা পেয়ে উচ্চারিত হয় ইত্যাদি। অন্যভাবে বলা যায় যে অন্য ধ্বনি সাহায্য নিয়ে যে ধ্বনি উচ্চারিত হয় তাকে ব্যঞ্জনধ্বনি বলে।
ব্যঞ্জণধ্বনি উচ্চারণের স্থান-ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় উচ্চারণ স্থান অনুসারে একে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রধান শ্রেণী গুলো নিম্নে দেওয়া হলঃ
ওষ্ঠ্য- ঠোঁট দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “প”, “ব”, “ম”। দন্ত্য- দাঁত দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ট”, “ঠ”, “ড”, “ঢ”। তালুয়ি- তালুর বিভিন্ন অংশ দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ত”, “থ”, “দ”, “ধ”, “ন”, “ল”। মূর্ধন্য- মূর্ধন্য দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “র”। কণ্ঠ্য- কণ্ঠনালী দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ক”, “খ”, “গ”, “ঘ”, “ঙ”। নাসিক্য- নাক দিয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ম”, “ন”।
উচ্চারণের নিয়মাবলী- ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় উচ্চারণরীতি অনুসারেও বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়। এর মধ্যে প্রধান শ্রেণীগুলি হল:-
ব্যঞ্জন- বাধাযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “প”, “ট”, “ক”। ঘর্ষণধ্বনি- ঘর্ষণযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ফ”, “স”। নাসিক্যধ্বনি- নাকের মধ্য দিয়ে বাতাস বেরিয়ে আসার ফলে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ম”, “ন”। ঘোষ-অঘোষঃ ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরযন্ত্রের কম্পন অনুসারেও বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত হয়। এর মধ্যে প্রধান শ্রেণীগুলি হল: ঘোষ- স্বরযন্ত্র কম্পিত হয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “প”, “ট”, “ক”। অঘোষ- স্বরযন্ত্র কম্পিত না হয়ে উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনি। যেমন, “ফ”, “স”, “খ”, “ঘ”।
উচ্চারণের নিয়ম অনুযয়ী..
|
|
|
|
|
|
|
|
এই নিয়ম অনুযায়ী আপনি যত দ্রুত বলতে পারেন আর এভাবে চর্চা করতে পারেন।
COMMENTS