ঈদুল আজহার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনটিকে সাধারণরত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরবানির ঈদ বলে আক্ষায়িক করে থাকি।
কোরবানির ঈদে যেসব করণীয় এবং বর্জনীয়
ঈদুল আজহার দিনটি অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনটিকে সাধারণরত ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা কোরবানির ঈদ বলে আক্ষায়িক করে থাকি। এই দিনে সবচেয়ে বড় ইবাদত হল কোরবানি করা। হজরত আয়েশা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন- হে আদম সন্তানরা তোমরা করো। কোরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করা (কোরবানি করা) আল্লাহর নিকটে অধিক প্রিয় কাজ। নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন (কোরবানি দাতার পাল্লায়) কোরবানি পশু,র শিং, লোম,চামরা ইত্যাদি বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ এসে হাজির হবে এবং কোরবানির পশুর রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার পূর্বেই আল্লাহ তায়ালার নিকট সম্মানিত স্থানে পৌঁছে যাবে।
(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)
এ দিনটিকে ঘিরে আমাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু করণীয় ও বর্জনীয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইবাদত-বন্দেগী ও তার প্রতি শুকরিয়া-কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দ্বারা সু-সজ্জিত।
কোরবানির ঈদে যে সমস্ত বিষয় আমাদের করণীয় তা জেনে নেওয়া যাক..
গোসল করা। |
উত্তম পোষাক পরিধান। |
সুগন্ধি ব্যবহার করা। |
ঈদগাহে যাওয়া। |
খুতবা শ্রবণ করা। |
শুভেচ্ছা বিনিময়। |
তাকবীর পাঠ করা। |
ঈদের দিনে খাওয়া। |
কোরবানি করা। |
আরও পড়ুন: কুরবানী সম্পর্কে জরুরি ৬৬ টি মাসয়ালা
হযরত যায়েদ ইবনে
আরকাম রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) এর সাহাবীগণ তাকে
জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এগুলোই কি কোরবানী?
রাসুল (সা.) জওয়াবে
বললেন, এটা তোমাদের জাতী পিতা হযরত ইব্রাহিম আ. এর সুন্নাত (রীতিনীতি)। তাকে আবারও
জিজ্ঞাসা করা হলো, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এতে আমাদের কি (পূণ্য রয়েছে)?
রাসূল (সা.) বললেন,
কোরবানির পশুর প্রতিটি লোমের পরিবর্তে নেকী রয়েছে। তারা আবারও বললেন, পশমওয়ালা
পশুদের জন্য তাহলে কি হবে? এদের তো পশম অনেক বেশ)। রাসূল (সা.) বলেছেন, পশমওয়ালা
পশুর প্রত্যেক পশমের পরিবর্তেও একটি করে নেকী রয়েছে।
(মুসনাদে আহমদ, ইবনে মাজাহ)
আরও ৩টি গুরুত্বপূণ্য করণীয় রয়েছে।
কোরবানির পশু গোশত বন্টন করা। |
কোরবানির রক্ত, আবর্জনা পরিষ্কার করা। |
গরীবদের সাহায্য করা। |
এ প্রসঙ্গে আল-কুরআনে
আল্লাহতাআলা বারবার ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা
তোমাদের উপার্জিত হালাল মালের কিছু অংশ এবং আমি যা তোমাদের জন্য যমীন হতে বের করেছি
তার অংশ ব্যয় কর’
(বাক্বারাহ ২৬৭)।
কোরবানির ঈদে যে সমস্ত বিষয় আমাদের বর্জনীয়
তা জেনে নেওয়া যাক..
ঈদের দিনে রোজা রাখা হারাম |
"ঈদের দুই দিন রোজা রাখা হারাম।" (বুখারী, হাদিস নং ১৭৫২) |
ঈদের নামাজের পূর্বে কুরবানি দেওয়া |
"যে ব্যক্তি ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে তার কোরবানি কোরে ফেলে, তার কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে না।" (তিরমিযি, হাদিস নং ১৫৩৭) |
ঈদের দিনে চুল ও নখ কাটা |
"যে ব্যক্তি ঈদের দুই দিনে চুল ও নখ কাটে, সে জাহিলিয়্যার অনুসরণ করে।" (আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪০) |
ঈদের দিনে পুরাতন পোশাক পরা |
"ঈদের দিন নতুন পোশাক পরো।" (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৫৩৮) |
ঈদের দিনে গীবত ও অপবাদ |
"ঈদের দিনে গীবত ও অপবাদ করা থেকে বিরত থাকো।" (আল-বাইহাকী, শু'আবুল ঈমান, হাদিস নং ৩৯৬৭) |
ঈদের দিনে অশ্লীলতা ও গান বাজনা |
"ঈদের দিনে অশ্লীলতা ও গান বাজনা থেকে বিরত থাকো।" (ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৫৩৯) |
কোরবানির কোন কিছু বিক্রি করা |
"কোরবানির কোন কিছু বিক্রি করা বৈধ নয়।" (তিরমিযি, হাদিস নং ১৫৩৮) |
মহিলা-পুরুষের বেপরোয়া দেখা-সাক্ষাৎ |
"পুরুষ ও মহিলাদের একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ করা উচিত এবং বেপরোয়া দেখা-সাক্ষাৎ করা থেকে বিরত থাকা উচিত।" (মুসলিম, হাদিস নং ৪২০৩) |
ঈদের দিনকে কবর যিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা |
"ঈদের দিনকে কবর যিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা ইসলামে বর্জনীয়।" (আবু দাউদ, হাদিস নং ২১৪১) |
এই সব বিষয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বাণী মুসলমানদের জন্য আদেশ ও নির্দেশিকা। ঈদুল আজহায় বর্জনীয় বিষয়গুলো মেনে চলার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ করতে পারবেন।
-0-
ইচ্ছাব্লগ এটি একটি প্রযুক্তি সম্পর্কিত টিউটরিয়াল এবং গাইড প্রদান করি থাকি। এই খানে যে কেও পড়তে ও লিখতে পাড়ে। এইখানে ফিচার,ছোটগল্প,কবিতা, আপনার জীবনের গল্প ইত্যাদি আপনার পছন্ডের লেখা পাঠাতে সরাসরি যোগাযোগ করেন। আমাদের প্রতিনিধি যাচাই করে আপনার সাথে যোগা করবে।
লেখা জমা নিচ্ছে 👉 :
আপনি সরাসরি ইমেইল করতে পারেন 👉 ‘ icchablog@gmail.com’
লিখাটি ভালো লেগলে অবশ্যই কমেন্ট এবং আপনার ফেসবুক ওয়ালে শেয়ার দিতে পাশে থাকবেন।
ইচ্ছাব্লগ ডট কম/এম.এম
COMMENTS