অসাধারন ছোট গল্প: জেনি আপু ছোট গল্প: জেনি আপু - কালকে জেনি আপু বেশ ধমকেই বলেছিল। তুমাকে দাদার সাথে দেখা করতে বলেছি ফোনে কথা বলতে বলিনি। আ...
অসাধারন ছোট গল্প: জেনি আপু
ছোট গল্প: জেনি আপু- কালকে জেনি আপু বেশ ধমকেই বলেছিল। তুমাকে দাদার সাথে দেখা করতে বলেছি ফোনে কথা বলতে বলিনি। আপুর ধমক শুনে আমি রীতি মত ভয় পেয়ে গেলাম। আপু যদি ভাইয়াকে বলে দেয় !!!
কি করবো বুজতে পারছিলাম না। অনেক ভেবে ঠিক করলাম। আপুর আগে ভাইয়ার সাথে আমাকে কথা বলতে হবে। প্রথম বারেই ভাইয়া ফোন রিসিভ করলো। ভাইয়া অনেক ব্যস্ত মানুষ সব সময়ই কোন না কোন মিটিংএ ব্যাস্ত থাকেন। ফোনে পেতে হলে বেশকয়েকবার ফোন করতে হয়। কপাল ভালো প্রথম বারেই পেয়েগেলাম।
- কি বলবা জলদি বল।
- ভাইয়া ………….
ভইয়াকে মেনেজ করতে কষ্ট হলনা।
অফিস থেকে বের হয়েই শুরু হলো বাসে উঠার যুদ্ধ। কারওয়ান বাজারে যাদের অফিস তারা রাস্তায় বের হলে নিজেদের রফিউজি মনে করন। আর যারা মতিঝিল থেকে বাসে উঠে তারা নিজেকে প্রধান মন্ত্রী ভাবেন। আমি রিফিউজি হয়ে তীর্থের কাকের মত রাস্তায় দাড়িয়ে থকলাম। বাসের জন্য।
আজকে আর বেশিক্ষন দারিয়ে থাকতে হলো না। সবকিছু এত সহজে হয়ে যাওয়ায় মনের মধ্যে একটু সন্ধেহ হলো। কিছু একটা ঘটতে চলেছে। হয়ত ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। অথবা এমন বাজে কিছু একটা হবে যা আমার জীবনের ইতিহাস হয়ে রবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাস পেয়ে গেলাম। কিন্তু সীট পেলাম না। খারাপের শরু !!!
দাড়িয়ে থাকতে হলো শ্যামলি র্পযন্ত। সিটে বসেই ঠিক করলাম কালকে সকালেই শেমল সাহেবের অফিসে যাব। তার সাথে দেখা করবো । পরে আপুকে ফোন করে স্যরি বলেদিবো
মেছে ফিরে দেখি জাহিদ আমার খাটে বসে আছে। আমি আসতেই অভিমানি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আাছে। তার এ তাকানোর অনেক অর্থ আছে। এখন কি অর্থ হতে পারে তা বুজতে পারছিনা। জাহিদ মেছের ছোট ভাই। তার বাড়ি নোয়াখালি। কিন্তু নোয়াখালির মানুষের কোন বৈশিষ্ট তার মাজে নেই।
আমি আসার মিনিট পাঁচেক পরে নিরবতা ভেঙ্গে বলল্য এত দেড়ি করলেন !? সন্ধ্য থেকে আপনার জন্য অপেক্ষা করছি। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। সে আমার চেয়ে আরো বেশি অবাক হলো। তার এ ব্যবহারটা রমিজ সাহেবের সাথে মিলে যাচ্ছে। মিরপুর এক নম্বরে তার একটি মুদি দোকান আছে। সে সবার সাথে ধমকের সুরে অতিরিক্ত অধিকার নিয়ে কথা বলেন।
কালকে জাহিদের প্রেজেন্টেশন আছে আমার স্লাইট বানিয়ে দেয়ার কথা ছিলো। সে জন্যই হয়ত এত অভিমান। ফর্মেট রেডি থাকায় বেশি সময় লাগলো না। রাতে মেছে রান্না হয়নি তাই না খেয়েই শুয়ে পড়লাম। ঘুমানোর আগে নিতুকে বলল্যাম সকাল আটটায় ডেকে দিতে। নিতু মেয়েটি খুব ভালো। আমার মনে হয় পৃথিবীর বুকে সেই এক মাত্র নারী যে মানুষকে প্যারা দেয় না বা প্যারা দিয়ে মজা পায় না। সারা রাত বকবকানি প্রেম তার পছন্দ না। প্রেম ভালোবাসা হল অনুভুতির বিষয়। শুধু শুধু মিষ্টি একটি বিষয়কে প্যারা ময় করে তুলার কোন মানে নেই। আমার জীবনে আমি অগনিত প্রেম করেছি এবং এখনও করছি। আমার প্রেমীদের মাঝে অনেকেই জানে না আমি তাদের কে কতটোকু ভালোবাসি। অনেকের সাথে কখনো দেখাই হয়নি। অন্য কারো কাছে প্রশংসা শুনেই তাদের প্রেমে পরে গেছি। এবং দুর থেকেই তাকে ফলো করছি। ভালোবাসছি। প্রেম কে যত দূর থেকে উপভোগ করা যায় প্রেম তত্ই সুন্দর হয়।
কথামত সকাল আাটটায় নিতু ডেকে দিল। আজ কাল সকালে ঘুমাতে ভালো লাগে। সকালের দিকে কিছুটা ঠন্ডাথাকায় কাথা মুড়ি দিয়ে ঘুমটা খুব চিজী লাগে। মিঠুর ফোনপেয়েই অনেক কষ্টে বিছানা ছেড় উঠে পরলাম। রেডি হয়ে নয়টার মধ্যেই বেরিয়ে পরলাম। গন্তব্য শ্যমল সাহেবের অফিস। তার অফিসে পৌছাতে দশটা বেজে গেলো।
রিসিপশন থেকে ভিজিটর কার্ড হাতে নিয়ে পাচতলায় চলে এলাম। এ ফ্লোরেই শেমল সাহেব বসেন। এখানেও দেখছি আরেকটা রিসিপশন। অফিসে অনেক নিয়ম কানুন। আগে জানলে আসতাম না। আমার এত ফরমালিটি ভালো লাগে না। তাছার বার বার একই কথা বলতে বিরক্ত লাগে।
রিসিপশনের মেয়েটা বড্ড সুন্দর। দেখতে ভালো লাগছে। আমার সাথে অন্য আরেকজন এসেছেন। একটু সৌজন্য বোধ থেকেই তাকে আগে যেতে বললাম। সে আমার আগে চলেগেল। আগে জানলে বলতাম না। কিছু কিছু মানুষ সৌজন্যতা বুজেনা। লোকটি তাদের কাতারে। আমার জায়গায় জিহাদ থাকলে বলতো লোকটা নিশ্চই নোয়াখাইল্লা। মিঠুর বাড়ি বরিশালে। বরিশালের লোকজন নোয়াখালির লোকজনদের দেখতে পারে না। তাদের মাঝে অনেক স্নায়ো যুদ্ধ চলে। মজার ব্যাপা্র হলো এসব যুদ্ধারা নিজেই তাদের যুদ্ধের কারন জানে না।
প্রায় ঘন্টা খানেক বসে আছি। শেমল সাহেবের ডাকার কোন লক্ষন নেই। ওনি নিজ থকে ডাকবন? না আমাকে নক করতে হবে কিছুই বুঝতে পারছিনা। রিসিপশনে বসা মেয়েটার নাম ঐষী। মেয়েটির নামের সাথে তার গঠনের মিল আছে। মেয়েটাকে দেখে একটি ডায়লগ মনে পরে গেলো কোন এক মুভিতে নায়ক নায়িকাকে দেখে বলছিল মেয়েটাকে মনে হয় সৃষ্টিকর্তা কয়েদিন ছুটি নিয়ে মনজোগ দিয়ে বানিয়েছে। ডায়লগটি ঐষীর জন্য শতভাগ সুট করে।
এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে ভালো লাগেনা। অন্য কোথাও বসলে হয়ত এতক্ষণে বরক্তি চরম আকার ধারণ করত। কেন জানি ঐষীর সামনে বসে থাকতে বিরক্তি আসছে না। কারন মেয়েটির দিকে তাকাতেই মনটা ফ্রেশ হয়ে যায়। আমি কখনো কারো জন্য অপেক্ষা করিনি।
মনে হচ্ছে আজ আমার রের্কড গড়ার দিন। আমি আজ দুটি রেকর্ড গড়তে চলেছি। এক কারো জন্য অপেক্ষা করা। দুই, দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকা। রেকর্ড গরতে হলে মাতাল হতে হয়। সুস্থ মাথায় কেউ কোনা রেকর্ড গড়তে পারেনি। কিন্তু আমি কিভাবে গড়বো এ দুই টেকর্ড?
ভাবতেই নিজেকে বাংলাদেশ টিমের প্লেয়ার মনে হচ্ছে। অনেক চাপ অনুভব করছি। বাংলার টায়গাররা চাপ নিতে পরেনা। এ সময় আমিও নিতে পরছি না। তবু এ রের্কড আমাকে গড়তেই হবে। কিন্তু কিভাবে কাটবো সময়?
ভাবতেই ঐষীর দিকে চোখ পরলো আমি যেন অল্পের জন্য কোথাও হারিয়ে গেলাম।
- কিছু বলবেন ?
ঐষীর ডাকে ঘোড় কাটলো।
- স্যারকে কি আবার নক করতে হবে? না তিনি, নিজেই ডাকবেন?
- স্যার নিজেই ডাকবেন। আপনার কথা বলা হয়েছে স্যারকে।
প্রশ্ন দুটি করার কোন দরকার ছিলোনা। শুধু ঐষী জানতে চাইলো বলেই বলা।
ভাবছি ঐষীর দিকে তাকিয়েই পার করে দিব বিরক্তিকর সময় টুকো । কিন্তু অপরিচিত একটি মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকাটা কেমন দেখাবে ? বা সে নিজেই কি ভাববে !!!
যা খুশি তাই ভাবুক আমার কাজ আমি করবো। তবে তাকিয়ে থাকবোনা কিছুক্ষণ পর পর তকাব। কিন্তু কয় মিনিট পর পর তাকাবো ? সেটা এখন ভাবার বিষয়।
সময় যেন ফুরোতে চায় না। প্রায় চার ঘন্টা অপেক্ষার পর দেখা মিলল্য শেমল সাহেবের। মনে হচ্ছে তিনি খুবই ব্যাস্ত সেই সাথে তামাম সৃষ্টি জগতের উপর বিরক্ত। ব্যাস্ততার চেয়ে যে তার ভাব বেশি। তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। আমি দারিয়ে তাকে সালামের সাথে পরিচয় দিয়ে বলল্যাম আমাকে জেনি আপু পাঠিয়েছেন।
- অ হ্যাঁ ঠিক আছে আমি দেখছি কি করা যায়।
এ কথা বলেই আবার ভিতরে চলে গেলো। আমি ঐষীর দিকে তাকিয়ে একটি কষ্টের হাসি দিলাম। ঐশী কিছু একটা বলতে চেয়েছিলো তক্ষণে বেরিয়ে পরলাম। রাস্তায় হাটছি আর ভাবছি।
আরও পড়ুন: পাশের সিটের মেয়েটা- ইচ্ছাব্লগ ডট কম
COMMENTS