ডকুমেন্টারিটি কানাডার উত্তর কুইবেকের উঙ্গাভা উপদ্বীপে ভ্রমণ, খাবারের সন্ধান এবং ব্যবসা করার সময় একজন ইনুক, নানুক এবং তার পরিবারের জীবন অ...
ডকুমেন্টারিটি কানাডার উত্তর কুইবেকের উঙ্গাভা উপদ্বীপে ভ্রমণ, খাবারের সন্ধান এবং ব্যবসা করার সময় একজন ইনুক, নানুক এবং তার পরিবারের জীবন অনুসরণ করে।
নানুক, তার স্ত্রী নাইলা এবং তাদের পরিবারকে নির্ভীক বীর হিসেবে পরিচয় করানো হয় যারা কঠোরতা সহ্য করে অন্য কোন জাতি টিকে থাকতে পারেনি।
নানুক অব দ্য নর্থ। এস্কিমোদের নিয়ে পৃথিবীখ্যাত ছবি। উত্তর মহাসাগরের দ্বীপে এই ছবি তৈরি করতে গিয়ে পরিচালক রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি সকলের অজ্ঞাতে এক অভিনেত্রীর আশ্লেষে আবদ্ধ হয়ে পড়েন, একটি পুত্রও জন্মায় তাঁদের। সেই পরিত্যক্ত পুত্র জোসেফির মেয়েই আজ এস্কিমোদের নেত্রী। জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।
পৃথিবীর প্রথম ‘তথ্যচিত্র‘ নানুক অফ দ্য নর্থ‘-এর ১০০ বছর: তথ্যচিত্র অথবা আর্ট ফিল্ম?
সিনেমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি | |
সিনেমার নাম: | নানুক অফ দ্য নর্থ (রিভিউ) |
সিনেমার বৈশিষ্ট্য: | সিনেমাটিক মাধ্যমের বিশাল সম্ভাবনাকে তুলে ধরেছে এবং তবুও ভয়ঙ্কর বর্ণবাদী প্রচারে পরিপূর্ণ একটি গল্প বর্ণনা করেছে। |
সিনেমার ধরন: | ডকুমেন্টারি |
ফরম্যাট: | ৩৫মিমি. |
রং: | সাদাকালো |
দেশ : | আমেরিকা |
মুক্তি: | ১১ জুন, ১৯২২ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) |
দৈর্ঘ্য: | ৭৯ মিনিট |
ভাষা: | নির্বাক, ইংরেজি ক্যাপশন |
নানুক অফ দ্য নর্থ ডকুমেন্টারির প্রধান কলাকুশলী | |
চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহণ, পরিচালনা: | রবার্ট জে ফ্লাহার্টি |
প্রযোজনা : | ফ্রান্স |
অভিনয়: | আলাকারিয়ালাক [নানুক], কুনাইও, নাইলা, চুনাইউ |
সঙ্গীত : | স্ট্যানলি সিলভার ম্যান |
সিনেমাটোগ্রাফি: | রবার্ট জে ফ্ল্যাহার্টি |
সম্পাদনা : | রবার্ট জে ফ্লাহার্টি, চার্লস গেলব |
দ্বারা বিতরণ: | Pathé এক্সচেঞ্জ |
রজার এবার্ট, 'নানুক দ্য নর্থ রিভিউ: | গ্রেট মুভি, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৫) |
ফিল্মের একটি নতুন ইতিহাস: | বেটসি এ. ম্যাকলেন, এপ্রিল ২০১২ |
Ø রবার্ট জে. ফ্লাহার্টি, "হাউ আই ফিল্মড ন্যানুক অফ দ্য নর্থ " মূলত ১৯২২ সালের অক্টোবরে দ্য ওয়ার্ল্ডস ওয়ার্ক-এ প্রকাশিত হয়। | |
Ø ডিন ডব্লিউ ডানকান, মাপকাঠি রচনা , ১১ জানুয়ারি, ১৯৯৯ | |
Ø চলচ্চিত্রের গল্প, মার্ক কাজিন, প্যাভিলিয়ন বুকস, সেপ্টেম্বর ২০০৬ প্রকাশিত। |
নানুক অফ দ্য নর্থ ডকুমেন্টারির বিশেষত্ব:
প্রথম পূর্ণাঙ্গ দৈর্ঘের তথ্যচিত্র হিসাবে এটিকে ইতিহাসে ঠাঁই দেয়া হয়েছে। অন্য অর্থে, নৃতত্ত্বের রেকর্ড বলা যায় এ ছবিকে।
কানাডা অধ্যুষিত আর্টিক কিউবেকের হাডসন বে নিকটবর্তী ইনুকজুয়াকে এ ছবির চিত্রায়িত হয়েছে। একজন অভিযাত্রী ও উন্নয়নকর্মী হিসাবে ইনউইট উপজাতির সঙ্গে তার পরিচিত বহুদিনের।
এই পরিচয় ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে ফ্লাহার্টি শুটিং করতে থাকেন। কিনত্মু একটা সিগারেটের আগুনে তার শুট করা সব ফুটেজ পুড়ে যায়।
উলেস্নখ্য সে সময়ের নেগেটিভগুলো ভীষণ দাহ্য ছিলো। এরপর ফরাসী অর্থ সহায়তায় ১৯২০-এর আগস্ট থেকে ১৯২১-এর আগস্ট পর্যনত্ম তিনি ঐ জায়গায় আবার শুটিং করেন। তবে ফ্লাহার্টির এ ছবির পুরোটাই তথ্যচিত্র আকারে শুট করা নয়, পূর্ণাঙ্গ বাসত্মবতাও নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তিনি ফিচার ফিল্মের মতো কাহিনীর চিত্রায়ন করিয়েছেন।
যেমন, এ ছবির মূল চরিত্র আলাকারিয়ালাক [নানুক] স্ব-চরিত্রে অভিনয় করলেও তার স্ত্রী চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন বাসত্মবে সে তার স্ত্রী নয়। আলাকারিয়ালাক বাসত্মবে শিকারের সময় বন্দুক ব্যবহার করলেও ফ্লাহার্টি দেখিয়েছেন তিনি বর্শা দিয়ে শিল ও সিন্ধুঘোটক শিকার করেন।
এটি তিনি ইনউইটদের প্রাচীন পন’তাকে তুলে ধরার জন্যই দেখিয়েছেন। ফ্লাহার্টি বলেছেন, সিনেমা নির্মাতাকে যথার্থ সত্যকে তুলে ধরতে হলে অনেক সময় কিছুটা কৌশল গ্রহণ করতে হয়। পরবর্তী আধুনিক চিত্রনির্মাতা বলেছেন যে, সে সময় ফ্লাহার্টিকে যে বড় এবং ভারী ক্যামেরা নিয়ে কাজ করতে হয়েছে তা দিয়ে ছোট্ট ঈগলুর ভিতরের অনেক চিত্রায়ণই সম্ভব ছিলো না।
তাই ফ্লাহার্টি বড় মাপের একটি ঈগলু বানিয়ে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস’করে তারপর শুট করেছেন। পর্যাপ্ত যন্ত্র ও সুবিধার অভাবেই ফ্লাহার্টিকে কিছু কিছু জায়গায় বাসত্মবের পূর্ণগঠন করে চিত্রায়ন করতে হয়েছিলো।
এক অর্থে নানুক এ ছবির নায়ক, অন্যদিকে বৈরী রম্নক্ষ্ম শীতল প্রকৃতি [নর্থ] এ ছবির খলনায়ক। একটু উষ্ণতার জন্য, একটু আহারের জন্য নানুককে সদাই লড়াই করতে হয়েছে।
সাধারণ তথ্যচিত্রকে এইভাবেই ফ্লাহার্টি নাটকীয় আদলে বেঁধেছেন। ফ্লাহার্টি নানুকের প্রতি প-র্ণ সহর্মমতায় দেখিয়েছেন, সকল বেদনা ও কষ্টর মধ্য দিয়ে সে সুখী ও স্বাধীন।
জীবনচিত্র: রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি পরিচালিত ক্লাসিক ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবির দৃশ্যে ইনিউইট এস্কিমোদের গৃহস্থালি
কাহিনী সংক্ষেপ
নানুক অব দ্য নর্থ নির্বাক তথ্যচিত্র। দক্ষিন মেরম্নর তীব্র শীতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের বেঁচে থাকার সংগ্রামই এ ছবির মূল উপজীব্য। কানাডীয় এন্টার্টিখ অংশের ইউনুক পরিবারেরনানুকদের জীবন নিয়ে এ ছবি চিত্রায়িত। তথ্যচিত্র ঘরাণায় এটিই প্রথম ব্যাপক আলোচিত ছবি।
একটি ভিন্ন দেশ, সংষ্কৃতি, দূর্গম এলাকা, তাদের দুঃসহ জীবন তুলে ধরতে ফ্লাহার্টি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। নানুকদের ঐতিহ্যবাহী ঈগলু বরফের ঘর বানানোর রীতি, তাদের মাছ ধরার কৌশল, শিল ও সিন্ধুঘোটক ওয়ারলুস শিকার ইত্যাদি নানা বিষয় এ ছবিতে দেখানো হয়েছে।
মূলত একটি পরিবার এবং রম্নক্ষ্ম-বৈরী প্রকৃতিতে তাদের টিকে থাকাই এই ছবির প্রধান উপজীব্য।
পরিবার এবং রম্নক্ষ্ম-বৈরী প্রকৃতিতে টিকে থাকাই এই ছবির প্রধান উপজীব্য
কিভাবে তৈরি হয়েছিল ‘নানুক অফ দ্য নর্থ?
কিভাবে তৈরি হয়েছিল ‘নানুক অফ দ্য নর্থ?
সিনেমার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
১৯২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ছবিটি ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের ‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’ পত্রিকার বিচারে সর্বকালীন সেরা প্রথম দশের একটি।
সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক ও নান্দনিক উৎকর্ষের জন্য আমেরিকার লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্টারে সসম্মানে নথিভুক্ত হয় ছবিটি।
কোনও ইটালীয় সমালোচক এক বার ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে ‘অপরাজিত’ছবিটি ‘গোল্ডেন লায়ন অব সেন্ট মার্ক’ পুরস্কার পাওয়ার পর সত্যজিৎ রায়কে ‘ভারতের রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি’ বলে অভিহিত করে একটা প্রতিবেদন লিখেছিলেন।
তা নজরে আসে ফ্ল্যাহার্টির আমেরিকা-নিবাসী স্ত্রী ফ্র্যান্সেস-এর। ১৯৫১ সালে মারা গিয়েছিলেন ফ্ল্যাহার্টি। ১৯৫৯-এর গ্রীষ্মে ‘রবার্ট ফ্ল্যাহার্টি স্মারক বক্তৃতা’য় স্বয়ং ফ্র্যান্সেস আমন্ত্রণ জানান সত্যজিৎ রায়কে, প্রথম বিদেশি বক্তা হিসেবে। সত্যজিৎকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন ফ্র্যান্সেস।
সত্যজিতের জীবনীকার মারি সিটনকে একটি চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, ‘সত্যজিৎ রায় শান্ত, স্বয়ংসম্পূর্ণ আর নির্লিপ্ত।
কিন্তু বব (রবার্ট) ছিল চঞ্চল, অত্যুৎসাহী আর তাই উষ্ণ।’ ফ্ল্যাহার্টির এই অতি উৎসাহই তাঁকে ‘নানুক’ছবিটি করতে হাতছানি দিয়েছিল, আর চাঞ্চল্য পরবর্তী দায়বদ্ধতা থেকে তাঁকে মুক্তি দিয়েছিল।
ফ্ল্যাহার্টি আর কখনও ফিরে যাননি ইনিউইটদের দেশে। এক বছরেরও বেশি সময়ে ইনিউইটদের সঙ্গে থাকাকালীন ছবির দুই অভিনেত্রীর সঙ্গেই বিভিন্ন সময়ে সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন ফ্ল্যাহার্টি।
শৌখিন সাময়িক বিয়েও হয় নায়লার সঙ্গে। কিন্তু নায়লার সে সুখ বড় ক্ষণস্থায়ী। হাডসনের নীল সাগরতটে আর ফিরে আসেনি ফ্ল্যাহার্টির জলযান। কত রাজপথ জনপদ পেরিয়েছে যুবক জোসেফি, ফ্ল্যাহার্টির পরিত্যক্ত সন্তান।
অদেখা অচেনা বাবার তখন বিশ্বজোড়া নাম। অভিমানী জোসেফির তাতে কিছু এসে যায়নি। মায়ের অব্যক্ত বেদনার সঙ্গী হয়ে সে অনুভব করেছিল, তাকে বেড়ে উঠতে হবে ইনিউইটদের সঙ্গেই। জোসেফিদের নির্বাসন সভ্যতার বিকৃতিকেই স্পষ্ট করে তোলে।
লোকলজ্জার কারণ হবে ভেবে জোসেফি কখনও গলা তোলেনি, নির্বিবাদে নির্বাসিত হয়েছিল দূর আর্কটিকের জনমানবহীন গ্রাইস ফোর্ড-এর প্রান্তে। যদিও নরক, তবুও ছোট্ট মার্থা অসহায় বাবার স্নেহের ছায়াতেই সুখের সন্ধান পেয়েছিল।
১৯৯০ সালে ‘নানুক রিভিজ়িটেড’ তথ্যচিত্রটি নির্মিত হয়েছিল। ছবিতে দেখানো হয়েছিল, ফ্ল্যাহার্টি ‘নানুক অব দ্য নর্থ’ ছবিতে সহজ-সরল ইনিউইটদের জীবনের এমন কিছু খুঁটিনাটির বাণিজ্যিকীকরণ করেছিলেন, যা তথ্যচিত্রের মূল্যবোধকে আঘাত করে।
তিনি ইনিউইটদের জীবনের রোমাঞ্চকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে বাস্তবচ্যুত হয়েছিলেন, বহু নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি করেছিলেন পরিচালনার সুবিধার্থে। ইনিউইটরা স্বপ্ন দেখেছিলেন, যদি ছবিটি তাঁদের যন্ত্রণাময় জীবনের অজানা কাহিনি মানবজীবনের মূলস্রোতে পৌঁছে দিতে পারে।
কিন্তু ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর পরিচালক হিসেবে ফ্ল্যাহার্টি খ্যাতির শিখরে উঠে গিয়েছিলেন, আর ইনিউইট এস্কিমোদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজকের বিশ্বায়নের পৃথিবীতেও নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। মার্থারা এখনও জীবিত।
ইনিউইট এস্কিমোদের সম্মান আর অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছরেই কানাডা সরকার ইনিউইটদের কলঙ্কময় নির্বাসনের ক্ষতিপূরণ দেবে।
কালের ইতিহাসে নির্বাসনের বছরগুলো হয়তো ক্রমশ মুছে যাবে, কিন্তু অভিমানী ইনিউইটরা রবার্ট ফ্ল্যাহার্টিকে তাঁদের জীবন থেকে ব্রাত্যই করে রাখবেন। হয়তো তত দিন, যত দিন থাকবে রবার্ট ফ্ল্যাহার্টির কালজয়ী ক্লাসিক ‘নানুক অব দ্য নর্থ’।
রবার্ট জোসেফ ফ্ল্যাহার্টি (১৮৮৪-১৯৫১), মিশিগানের অভিযাত্রী এবং স্থির ফটোগ্রাফার, একজন খনির প্রসপেক্টরের ছেলে ছিলেন। তিনি উত্তর আমেরিকার মরুভূমিতে ভ্রমণ করতে পছন্দ করতেন এবং বছরের পর বছর ধরে এই অঞ্চলের এস্কিমো (ইনুইট) মানুষের সাথে যোগাযোগ গড়ে তোলেন।
১৯১০ সালে, কানাডিয়ান উদ্যোক্তা এবং রেলওয়ে ঠিকাদার, উইলিয়াম ম্যাকেঞ্জি খনিজ আমানত পরীক্ষা করার জন্য হাডসন উপসাগরের পূর্ব উপকূলে একটি অভিযানের জন্য ফ্ল্যাহার্টিকে নিয়োগ দেন। ফ্লাহার্টি পরের ছয় বছরে এই এলাকায় চারটি অভিযান করেন।
এদিকে,১৯১৩ সালে ফ্ল্যাহার্টির স্ত্রী এবং আজীবন সহযোগী, ফ্রান্সিস তাকে একটি মোশন-পিকচার ক্যামেরা কিনতে উৎসাহিত করেন। নিউইয়র্কে অপারেশন কোর্স করার পর, ফ্ল্যাহার্টি ইনুইট ফিল্ম করার জন্য তার ক্যামেরা নিয়েছিলেন।
১৯২০ সালের জুনে, ফ্ল্যাহার্টি তার চলচ্চিত্রের শুটিং শুরু করার জন্য (৭৫,০০০ ফুট ফিল্ম সহ) ট্রিপ করেছিলেন যা ধীরে ধীরে এস্কিমোদের দৈনন্দিন জীবনকে ক্রনিক করে একটি ট্রেলব্লাজিং এথনোগ্রাফিক ডকুমেন্টারিতে পরিণত হয়েছিল। ক্যামেরাটির ওজন প্রায় ৬০ পাউন্ড এবং ট্রাইপড ছিল ১৫ পাউন্ড।
এই সমস্ত ফ্ল্যাহার্টির ক্রু হিমায়িত ল্যান্ডস্কেপ এবং ফ্লোস জুড়ে নিয়েছিল। বছরব্যাপী অভিযানের অর্থায়ন ছিল পশম ট্র্যাপার থিয়েরি ম্যালেট। ফ্ল্যাহার্টি প্রথমে ওয়ালরাস হান্ট সিকোয়েন্সটি শ্যুট করেন এবং ফুটেজটি ইনুইট (একটি অস্থায়ী ল্যাবে) স্ক্রীন করেন। তিনি বর্ণনা করেছেন যে ফুটেজটির খ্যাতি সমগ্র ইনুইট দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং ফলস্বরূপ স্থানীয়রা সক্রিয়ভাবে তার প্রকল্পে অংশগ্রহণ শুরু করে
মূল্যায়ন
নানুক অব দ্য নর্থ’ছবিটি মূল্যায়ন
প্রত্যেকটি চলচ্চিত্রেই সাধারণত দুইটি বিষয় দেখানো হয়। একটি হলো- ভালো দিক এবং অপরটি হলো- খারাপ দিক। একই ভাবে এই ডকুমেন্টারিতেও তেমনটাই দেখানো হয়েছে।
ভালো লাগা
এই ডকুমেন্টারির ভালোলাগা বিষয়টি উল্লেখ করা কষ্ট হয়ে যাবে। এই ডুকুমেন্টিারির প্রতিটা সিন ভালো লাগার মতো মুহূর্ত একটা সংগ্রাম উদ্দীপনা কাজ করে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক টি মুহূর্ত শেয়ার করি।
১. আর্কটিক শীতের বরফে মধ্যে নানুকের যে টিকে থাক একটি সংগ্রাম এই বিষয়টি আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে। নানুক জানে যে সীলগুলিকে প্রতি ২০ মিনিটে শ্বাস নিতে হবে এবং আর্কটিক শীতের বরফে নিজেদের জন্য একটি বায়ু গর্ত খোলা রাখতে হবে।
২. মরিয়া যখন লাইনটিকে দরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নানুক লাইনটিকে গর্ত থেকে ১০- ১২ ফুট বাইরে নিয়ে যায়,এবং তারপরে বরফের উপর দিয়ে পিছলে ফিরে টেনে নিয়ে যায় এবং বারবার টানতে থাকে।
৩. দলের সবাই সবার ক্ষুদার্থ মুহূর্তগুলিও ,কারণ তারা হঠাৎ তুষারঝড়ে প্রায় হারিয়ে গেছে, এবং প্রচুর ক্ষুধা ও হতাশার সময় কাটায়।
৪. ছবিটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্যগুলোর একটিতে একটি ইগলু নির্মাণ দেখানো হয়েছে।
৫. বরফ রাজ্যের মধ্যে ছোট থেকে যে বেঁচে থাকার একটা সংগ্রাম বাচ্চাদের শেখানো হচ্ছে কিভাবে স্বীকার করতে হয় সকল প্রতিকূলতা আর বাধা উপেক্ষা করেই নিজেকে কিভাবে সংগ্রাম করে টিকে থাকা যায় এটি শিক্ষা দিচ্ছে এই বিষয়টি আমার কাছে ভালো লাগছে।
খারাপ দিক
১. ফ্লাহার্টি কিছু দৃশ্য কৃত্রিমভাবে তৈরি করার জন্যে সমালোচিত হয়েছেন। অভিযোগ উঠে, যে তিনি তথ্যচিত্রের বাসত্মবতাকে লংঘন করেছেন। ছবিতে ফ্লাহার্টি উলেস্নখ করেছেন যে, ছবি তৈরির দু’বছর পর আলকারিয়ালাক খাদ্যের অভাবে মারা যায়। এ তথ্য সঠিক নয়। আসলে তিনি অসুস্থ্য হয়ে মারা যান।
২. আমেরিকার লাইব্রেরি অব কংগ্রেসের ন্যাশনাল ফিল্ম রেজিস্টিতে ১৯৮৯ সালে ঠাঁই পাওয়া ২৫টি ছবির মধ্যে এটিও একটি। এ ছবিকে সংরক্ষণের কারণ হিসাবে,‘সাংষ্কৃতিক, ঐতিহাসিক এবং নান্দনিক বৈশিষ্টকে গুরম্নত্ব দেয়া হয়েছে।
৩. এ ছবির গল্প এবং যাদের নিয়ে এ ছবি তাদের কথা নিয়ে ম্যালনি ম্যাকগ্রথ ‘দ্য এক্সাইল : আ ট্রূ স্টোরি অব ডেসিপশন এন্ড সারভাইভাল এমনগস্ট দ্য ইউইট অব আর্টিক’ নামে একটি গ্রন লেখেন।
৪. নানুকের চিত্রায়ন নিয়ে ‘কাবলোনাক’ নামে ১৯৯৪ সালে একটি ছবি নির্মিত হয়। এ ছবিতে ফ্লাহার্টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন চার্লস ডান্স এবং নানুকের চরিত্রে আডামি কুইসিয়াক ইনুকপুক নানুকেরই আত্মীয় অভিনয় করেছেন।
সূত্র |
►সিনেমা দেখা। ►উইকিপিডিয়া । ► নোট বই । ►ইউটুভ চ্যানেল। ► সিনেমা দেখুন। |
COMMENTS