এই যুগে জমি আছে কিন্তু জমি নিয়ে জামেলার মধ্যে পড়ে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া কষ্টকর। জমি ক্রয় বা বিক্রয় করতে চায়? এমন মানুষ আছে যারা কোন দিক বিবেচনা করে
এই যুগে জমি আছে কিন্তু জমি নিয়ে জামেলার মধ্যে পড়ে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া কষ্টকর। জমি ক্রয় বা বিক্রয় করতে চায়? এমন মানুষ আছে যারা কোন দিক বিবেচনা করে না।
তাধের ধারণা এক খন্ড জমি হলেই হলো তারা টাকা পয়শা নিয়ে জমি ক্রয় করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তারা এখনো বুকার সর্গে বসবাস করে।
জমি কেনার পর যে তারাই হয়রানির শিকার হোন। তাই জমি ক্রয় বা বিক্রয় করতে এই বিষয়গুলো আপনাকে ভাল করে জানতে হবে। জমি ক্রয় বা বিক্রয় পূর্বে কি বিষয় ভালভাবে যাচাই করা প্রয়োজন এবং জমি ক্রয়ের পর করণীয় কি তা আজকের ইচ্ছাব্লগ তুলে তরার চেষ্টা করবো ইনশআল্লাহ।
জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে সর্বপ্রথম জামেলাটাই হচ্ছে টাকার দুর্নীতি বাংলাদেশে এটি নতুন কিছু নয়। বহু আগে থেকে দুর্নীতি চলে আসছে। অনেকে দালালদের খপ্পরে পড়ে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে নিঃস্ব হয়ে যান। তাই জমি ক্রয় করতে আপনাকে সতর্ক এবং সঠিক উপায় অবলম্বন করতে হবে।
জমি ক্রয় বা বিক্রয় পূরে জানা দরকার
জমি ক্রয় বা বিক্রয় করার পূর্বে নিচের বিষয়গুলো ভাল করে যাচাই করে নিবেন:
১. জমির খতিয়ান অর্থাৎ বিক্রেতার সঠিক মালিকানা ও হস্তান্তরের বৈধ অধিকার আছে কি না যাচাই করে নিবেন।
২. হাল সন পর্যান্ত ভূমি উন্নয়ণ কর পরিশোধ করা আছে কিনা তা যাচাই করে নিবেন।
৩. প্রস্তাবিত সম্পত্তির সর্বশেষ খতিয়ান দাতার নিজ নামে কিংবা পূর্ব পরুষের সম্পত্তি হলে প্রস্তাবিত সম্পত্তি পূর্ব-পরুষের নামে আছে কি না। যে কোন খতিয়ান অনলাইনে যাচাই করে নিবেন।
৪. হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি বাংলাদেশ দালাল (বিশেষ ট্রাইবুনাল) আদেশ ১৯৭২ এর অধীন ক্রোকের আওতাধীন নয় নিশ্চিত আছে কিনা যাচাই করবেন।
৫. প্রস্তাবিত হস্তান্তর আপাততঃ বলবত অন্য কোন আইনের বিধানের সহিত সাংঘর্ষিক নয় তা নিশ্চিত করা।
৬. প্রস্তাবিত সম্পত্তির দখল বিক্রেতার আছে কিনা।
৭. অন্য কোন পক্ষের সাথে বিক্রয় চুক্তি বা বায়না পত্র রেজিস্ট্রি হয়েছে কিনা।
৮. নাবালকের সম্পত্তি হলে বৈধ অভিভাবক কিংবা আদালত কর্তৃক নিযুক্ত অভিভাবকের বিক্রয়ের ক্ষমতা আছে কিনা।
৯. বাংলাদেশ পরিত্যক্ত সম্পত্তি (নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা ও নিষ্পত্তি) আদেশ ১০৭২, অনুযায়ী পরিত্যক্ত নয় তা নিশ্চিত হওয়া।
১০. হস্তান্তরের জন্য প্রস্তাবিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত নয় নিশ্চিত করা।
১১. জমি বিক্রয়ের জন্য অ্যাটর্ণি নিয়োগ আছে কিনা যাচাই করা।
১২. সম্পত্তি খাস বা সরকারি নয় তা নিশ্চিত হওয়া।
১৩. প্রস্তাবিত সম্পত্তি কোন ব্যাংক কিংবা কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিকট দায়বদ্ধ কিনা।
জমি ক্রয় করার পর করণীয় কি?
জমি ক্রয়র করার আগের বিষয়গুলো ভাল করে যাচাই করে নিবেন। তারপর সম্পত্তি হস্তান্তরের দলিল রেজিস্ট্রি করে নিবেন।
যে কোন দলিলের মাধ্যমে জমি প্রাপ্তির পর জমিতে আপনার মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য নিম্নলিখিত কাজগুলো করতে হবে:
১.দলিল রেজিস্ট্রির পর আমিন দ্বারা জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে পূর্বের মালিকের কাছ থেকে দখল বুঝে নিন।
২.রেজিস্ট্রি অফিস থেকে মূল দলিল পেতে দেরি হলে মূল দলিলের নকল বা সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করুন।
৩.দলিলের নকল প্রাপ্তির পর দ্রুত সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে আবেদন করে নিজ নামে নামজারি (খারিজ/ মিউটেশন) করুন। কেননা নামজারি করতে দেরি করলে অসাধু বিক্রেতা আপনার ক্রয়কৃত জমি অন্যত্র বিক্রয় করতে পারে।
৪. ভূমি অফিসে আপনার ক্রয়কৃত জমির নামজারি হলে, নামজারি খতিয়ান, ডি.সি.আর সংগ্রহ করুন এবং নতুন হোল্ডিং এ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করে দাখিলার কপি সংগ্রহ পূর্বক যত্নসহকারে সংরক্ষণ করুন।
৫. জমিতে আপনার দখল প্রতিষ্ঠার জন্য জমির প্রকৃত ব্যবহার করুন। যেমন- চাষাবাদ, গাছপালা রোপন, ঘরবাড়ি নির্মাণ ইত্যাদি করে নিজের দখল প্রতিষ্ঠা করুন।
মূল কথা:
আশাকরি জমি ক্রয় বিক্রয় করার আগে ও পরে কি করবেন তা জানতে পেরেছেন। এই সংক্রান্ত কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। আপনাদের যে কোন কমেন্ট আমরা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি।
COMMENTS