ভাবছিলাম ঘুম নিয়ে একটি ফিচার লিখব কিন্তু ঘুমের জন্য এটা আর লিখতে পারছি না। আজ হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে লেখা শুরু করলাম। ঘুম ঘুম মনোভাবে লিখছি, ব...
ভাবছিলাম ঘুম নিয়ে একটি ফিচার লিখব কিন্তু ঘুমের জন্য এটা আর লিখতে পারছি না। আজ হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে লেখা শুরু করলাম।
ঘুম ঘুম মনোভাবে লিখছি, বুঝতেই পারছেন কেমন হবে।
তো ঘুমের ঘোরে কথা আর না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।
ফিচার লেখার আগে ঘুম নিয়ে অনেক অসস্থি অনুভব করছিলাম। তাই প্রথমেই দাদির কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম। " দাদি অাগেকার দিনের ঘুম আর এখনকার ঘুমের মাধ্যে কোনো পার্থক্য দেখতে পাচ্ছ কি? "
দাদি তো আমার কথা শুনে হাসতে লাগলো। আর সে বলল,
" হ্যাঁ, পার্থক্য তো খুঁজে পাচ্ছিই"।
আমি বললাম তো কী পার্থক্য খুঁজে পেলে? সে বলল," অাগেকার দিনে ঘুমাতে পারতাম না চুরের ভয়ে আর এখন কার দিনে ঘুমাতে পারতেছি না আবিষ্কৃত নতুন নতুন প্রযুক্তির কারণে "। অারো অনেক কথাই বলল, সব কথা বলতে পারলাম না ঘুমের কারণে।
তাতে দাদির কথা শুনে মনে হলো বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে দাদি একটু অস্বস্তি বোধ করছে। তারপর ভাবলাম বর্তমানের যুগের শিক্ষিত সমাজের লোকদের কাছে যাই। তারা হয়তো ভালো করে বিষয়টা বুঝিয়ে বলতে পারবে। তাই অামারি এক ছোট ভাইয়ের কাছে গেলাম। ছোট ভাই ইন্টার ফাস্ট ইয়ার বিজ্ঞান শাখার ছাত্র। সে খুবই বুদ্ধিমান।
তো তাকে জিজ্ঞেস করলাম,''
ঘুম সম্পর্কে তোর কি ধারণা,?"
সেও হাসলো আর বলল,"
ভাইয়া তুমি আবার ঘুম নিয়ে কি শুরু করলা। আমি বললাম যদি বলতে পারিস তাহলে বল ? " দেখ ভাইয়া, ঘুম পৃথিবীর সকল প্রাণীর একটি শরীর ভিত্তিক কার্যক্রম। তবে কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। মানুষের ক্ষেত্রেই দেখো, তারা সারা দিন কোন না কোন কাজ করে এবং নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে। মানুষের শরীরটাকেই তুমি যন্ত্র স্বরূপ বলতে পারো না।
কারণ তারা একটানা কাজ করে যেতে পারে না। তাদের বিশ্রামের প্রয়োজন হয়," আমাদের কথা বলার সময় আমার আর এক ছোট ভাই জিজ্ঞেস করল, " ভাইয়া ঘুমালে আমরা চোখে দেখতে, কানে শুনতে, কোন কিছু বলতে, তাছাড়া কোন কিছু অনুভব করতে পারি না কেন ?," আমি বললাম ঘুমালে তো মানুষ শুনবে না এটাই স্বাভাবিক।
আমার কথা শুনে ২ জনেই হাসল
পরে বুঝলাম তারা দুজনেই মনে হয় উত্তরটা জানে, তাই আমাকেই জিজ্ঞেস করতে হলো, কেন রে......?
উত্তরটা বিজ্ঞানী ভাই দিতে চাইল, " ভাইয়া বিষয়টা আমি তোমাকে একটা উদাহরণের মাধ্যমে বুঝাতে চাই। ধর, তুমি ধান কাটতেছ হঠাৎ করে তোমার হাতের আঙ্গুলে কেটে গেল, খুব ব্যথা করছে, এমন সময় তোমার পায়ে একটা পিপড়া কামড় দিল, তোমার কাছে এখন প্রশ্ন, তুমি ওই পিপরা আগে পা থেকে সরাবে না হাতের আঙুল ধরে রাখবা? "
আমি বললাম তখন তো ওই একটা পিপড়ার কামড় কেন অনেকগুলা পিপড়া কামড় যদি দেয় তবুও আমি বুঝবই না। " ঠিক বলছো ভাইয়া কারণ, তোমার কাছে তখন ওই হাত কাটার ব্যথাটা অনেক বড় একটি উদ্দীপনা। এখানে সামান্য পিঁপড়ার কামড়ে উদ্দীপনা তুমি বুঝবে না।
ঠিক তেমনি ঘুম হচ্ছে মানব শরীরের একটি বড় উদ্দীপনা, এখানে কানে শোনা, চোখে দেখা, কথা বলার উদ্দীপনা গুলো বুঝতেই পারবে না। এই প্রশ্নের উত্তরটা আমি তো এভাবে বলতেই পারতাম না। তুই আসলে অনেক গ্রেট রে ভাই !! এই বলে কথা সেখানেই শেষ করলাম।
তারপর বিকালে বাজারে গিয়ে একটা চায়ের দোকানে চা খেতে বসলাম। এমন সময় এমন সময় এক ট্রাকের ড্রাইভার বলতাছে," কি কন ভাই আমি কিছুদিন আগেও তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ট্রাক চালাইয়া প্রায় আধা কিলোমিটার চলে গেছিলাম ! " কথাটা শুনে মনে মনে ভাবলাম তাহলে কি ছোট আমাকে মিথ্যা বলল। তারপর ভাবলাম না সে তো আমাকে বাস্তব উদাহরণ দিয়েছে, তাছাড়া চায়ের দোকানে সত্যি কথা একটু কমই হয়।
আমার কেন জানি সব সময় মনে হয় এই ঘুম নিয়ে সকল প্রাণী একমত না। কারণ দেখন গরু-ছাগল বসে ঘুমায়, ঘুড়া দাড়িয়ে ঘুমায়,মাছ চোখ খুলেই ঘুমায় এগুলো কিভাবে সম্ভব !!!
পরে বুঝতে পারলাম ছোট যে বলল, ঘুম একটি বড় উদ্দীপনা।
তাহলে সব প্রাণী তো আর উদ্দীপনা গুলো একভাবে নিবে না।
কারণ তারা তো সব দিক দিয়েই ভিন্ন, তাই তাদের উদ্দীপনা নেওয়ার ব্যবস্থাটাও ভিন্ন ভিন্ন হয়।
যেমন কেউ বসে, কেউ বা দাড়িয়ে, আবার কেউ চোখে খুলেই।
সবশেষে মনে হলো....মাছ যদি চেয়ে চেয়ে ঘুমায় তাহলে কি মাছ ঘুমিয়েও দেখতে পায় ????
লেখক- মাসুম মিয়া
শিক্ষার্থী জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
Email : masumrana200000@gmail.com
COMMENTS